আমার দুয়ারে এসে দিয়ে গেল নিমন্ত্রণ।
‘দাদাবাবু, চিঠি!’
আমি বললাম, ‘একটু বসে যাও কমল।’
চিঠিওয়ালা, চিঠি এলেই আসে;
কখনোই বসে না।
দুচাকার সাইকেলের সিটটি ছাড়া কমলের যেন
কোথাও আর বসতে নেই।
খামখানা খুললাম। অতি পরিচিত লাইন। চিঠিতে লেখা
‘ওঁ গঙ্গা’।
কে আবার পৃথিবী ছেড়ে গেল!
হতে পারে পরিচিত;
হতে পারে, নয়।
‘দিব্যান লোকান্ স্বগচ্ছতু’
তিনি দিব্যলোকে গমন করুন।
কিছুক্ষণ আগে একজন অপরিচিতের জন্য
ব্যথিত চিঠিটা টেবিলে গড়াচ্ছে
যেমন দুপুর গড়ায় গড়গড়ানি।
বাইশ বছরের পুরোনো অভ্যাস।
খাওয়ার পর গড়গড়ানি, নাক চুবানি কতই তো হলো
আঁশ তবু মিটল কই!
পরিচিত অভিন্ন অধরে কী এত সুধা!
এ সকল ছেড়ে অতৃপ্ত হৃদয় দিব্যলোক যেতে চায় কই!
ছাড়ো ছাড়ো, ভরদুপুরে ভণ্ডামি, ছেলেমানুষী
আর কি মানায়, ছিঃ!
কার চিঠি?
চিঠির উপর, মৃতের নাম কালো কালিতে কেটে
বড় যত্নে নিজের নামখানি লিখে দিলাম।
নাও ধরো, পড়ো মন দিয়ে।
যৌথ অনেক বছরের পরও, বাকি ক’টা দিন কি
বুড়ো এ প্রেমিককেই দেবে?
গিন্নি চোখে চোখ চেয়ে বলল,‘আজ কলপাড়ে
শাঁখাটা বেড়েছে, সিঁদুরও অফুরান;
বিকেলে একজোড়া শাঁখা,
এক কৌটা সিঁদুর এনো। মনে থাকবে?’
আমি বললাম, ‘আচ্ছা।
শোনো, তুমি আজ আমায় পান দিতে ভুলে গেছো?’
ছলছলে চোখে পান সাজা সোজা নয়, আমি জানি।
এছাড়াও দেখুন: বিজয় তোরণে শব
No Comments