ধ্যানমগ্ন জীবনের সৌরভ

সকল কবিতা By 4 months ago 1 Comment
5
(1)

নিস্তব্ধ রাত্রির খোলসখানি ভেঙ্গে
জোয়ারের পর্বতমালা আঁধারের গ্রাস হয়ে গেছে।
পৃথিবীর আঁধার থেকে উত্থিত জীবন
রক্ত সাগরে নামে অজেয় মহিমায়! নদীরা
পাদস্পর্শে ছোটে, স্তন বরাবর কুয়াশায় ঢাকা তার মাথা
জেগে আছে পৃথিবী ফুঁড়ে!
উন্নত যারা তারা বলেছিলেন বজ্রনিনাদের মতো কণ্ঠস্বরে;
সমুল আন্দোলন!
এরই জন্য কি? এমনই কিছু পূর্বজ রাতে!

বাতাস পূর্বমুখী। দখিনে ফেরাবে মুখ!
নাকের গহ্বরে ভিড় করে দুর্গন্ধ শবের।
পোড়া মাংসেরও নাকি সুমিষ্ট সুগন্ধ, আস্বাদন,
আছে মৃত্যুদ- প্রাপ্তেরও বুক ভরা নিশ্বাস! আপন দুর্গন্ধ
ছাপিয়ে সমস্ত তীব্রতা বয়ানে
পচা শবের গন্ধ করে অনুভব বোধের অপমানে।
ফেরাবে মুখ গন্ধহীন দখিনের উত্তপ্ত সৌরভে!
ধ্যানমগ্ন জীবনে এমন অবসরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে
এখনো মৃতেরা বাঁচে!

অদম্য যুবতী, যুবতীর আত্মায় গাঁথা পেশীর
দীর্ঘশ্বাস, মৃত্যুর সাথে যোদ্ধার মিত্রতা যেমন
রাজপুত্র গড়ে তোলে প্রজন্মের ছাই দিয়ে রাজ্য তেমন।
শবের ধ্বংস কোনো কালে-ই স্থায়ী নয়।
অবিরাম সমুদ্র গর্জন ভুলে পূর্ণ নিদ্রায় আছে সমকাল।
কে পারে ধ্বংস করে দিতে লক্ষ্য যার সূর্যের মতো?

পূর্ণ যুবতী হৃদয়ে যৌবন গায় গান।
দূর কোনো উপত্যকা হতে ভেসে আসে সুর
সোনালি কাঠের বীণা হতে; সুর তার স্পষ্ট বড়।
সকল দাম্ভিকতা নিঃশেষ হবে না বেছে নেওয়া
কঠিনতম পথে। চান্দ্র-সৌরবর্ষের দাবি মেনে
পরিপূর্ণতার পথে যেতে যেতে বীজ বুনে দেখায় সমকাল।
মাটির প্রতি তৃষ্ণায় পৃথিবীর গর্ভ হতে এসে
প্রেরণারা বাসা বাঁধে।
তাই সে ক্ষণিক ঝড়ে তুলে নেয় বুনোফুল;
পৃথিবীর বুকে আঁকে জীবন তৃষ্ণাটুকু।
গোপন অন্ধকারে মৃত্যুকে করে সাকি।
দুঃখকে মোড়ক করে, ইচ্ছাকে দীর্ঘ করে-
(যদিও আকাঙ্ক্ষিত দিন রাজবন্দী আজ।)

দিন আচ্ছন্ন তবু সূর্যমুখীর দ্রোহে ডানা মেলে পর্বত।
পর্বতবাসী ঈগলের মতো মাথা তার উঁচুতে ওড়ায়।
সিদ্ধান্ত চিরতা যেন,
প্রশংসা কে গায়;
স্বেচ্ছায় দুঃখকে কে ডাকে প্রার্থনায়?
ভূমিতে শায়িত পৃথিবী যখন
ক্ষুধায় কাঁদতে থাকে, মহাকালের ওপারে
আত্মারা জাগে। বোঝা যায় পূর্ব অনুমানে,
‘আমাদের আগামীকাল নতমুখী পঙক্তি নয়।’
কেউ যেন যোদ্ধাদের মৃত না বলে;
এখানে যোদ্ধাদের ‘বিদেহী’ ভাবা- নিষেধ।

আরো জানুন: ছুঁয়ে দেখো রূপকথা

বিজ্ঞাপন

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 5 / 5. Vote count: 1

No votes so far! Be the first to rate this post.

Author

তন্ময় সাহা(১৯৮৩)–জন্ম বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসাবে খ্যাত কুষ্টিয়া জেলায়, কুষ্টিয়ায় বেড়ে ওঠা, শৈশব কেটেছে, কৈশোরেও তার কুষ্টিয়া আর গড়াই নদীর মাখামাখি। তারপর লেখাপড়া ও কর্মসূত্রে বহুদিন ধরে খুলনায় বসবাস। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজি এন্ড জিনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক, বায়োটেকনোলজিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা হতে। এরপর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সিকিউটিভ এমবিএ (এইচ আর এম) সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও তিনি ‘দি ফ্লেচার স্কুল অফ ল’ এন্ড ডিপ্লোম্যাসি; টাফ্ট ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ডিজিটাল ফিন্যান্স প্যাকটিশনার হিসাবে সনদপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি উপপরিচালক হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক, খুলনায় কর্মরত আছেন। লেখালিখি চলেছে বিক্ষিপ্তভাবে, শখে, আদিষ্ট বা অনুরুদ্ধ হলে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যুক্ত ছিলেন নাট্যদল ‘থিয়েটার নিপূণ’ এবং বিজ্ঞান পত্রিকা ‘বায়োটকের’ সাথে। বই, বাংলা সাহিত্য হলো তার ভালোবাসা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া প্রতিযোগীতায় স্কুল পর্যায়ে পাওয়া সার্টিফিকেট আর উপহারে পাওয়া বইগুলোকে আজও অতি যত্নে রেখেছেন, নিজস্ব বুকসেলফে। মুলতঃ কবিতা লেখার শখ, টুকটাক গদ্য লেখারও চেষ্টা চলে। বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাগুলি সহ সোস্যালমিডিয়া, টুকরো কাগজ আর ডাইরিগুলোর পাতা থেকে অদুর অতীতে লেখা নিজের পছন্দের বেশ কিছু কবিতা মলাটবন্দী করে, আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন হোরাসের চোখ, বিবিধ ঘোড়সওয়ার ও কালো মেম কাব্যগ্রন্থে।

1 Comment

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!