একা দেবদারু

সকল কবিতা By 7 months ago No Comments
5
(1)

পারিজাত প্রেম তুমি নিরবতা, বসন্তে নিয়েছ প্রাণ কেড়ে।
মানুষেরা অবিকল তার মতো দুটি হাতে দুটি পায়ে হুবহু।
নিঃসঙ্গ মানুষ আজো কেন হলো না প্রেমিক!
যদিও অবেলায় কেউ তার সুবর্ণ সময় নেয়নি কেড়ে,
জীবনের আনন্দ যজ্ঞের নিমন্ত্রণে কেউ তাকে
নীল খাম দেয়নি উপহার ।
বিমোহিত আমি! অন্ধ মুগ্ধতায়!
খুলে দেখি পায়রার ঝাঁক! বিচিত্র রঙের সাদা নয়, মিশ্র!

চাঁদনী রাতে বিমোহিত পৃথিবীর মতো
সুদর্শনের দৃষ্টি নিয়ে অপেক্ষায়-
গভীর আকুতি তার কান পেতে শুনি ।
ব্যথার ডঙ্কা তখন অন্য কুহরে বাজে।
প্রেমিকের কথাগুলি অমূলক বক্তৃতা যেন!
পচে যাওয়া ডিমের কুসুমের মতো স্মৃতি
কুঁড়ে খায় বলে, বলে বলে হালকা হবার এ প্রয়াস!

জঘন্য রাতেরা, একা দেবদারু,
মগডালে সাবধানী চড়–ই সে কথা শোনে।
শোনে অবচেতনের নতুন প্রভাত।
ইদানীং স্মৃতিও হাওয়ায় দোলে; অবেলায়
রোমাঞ্চ এলে ছুঁয়ে যায় ফাগুনে হাওয়া।
কোন কোন দুঃখে লজ্জাবতীর মতন লজ্জায়
প্রেমিকেরা রাত জাগে একা

সবকিছু এলোমেলো হলে
স্মৃতির পাতায় বেদনা তখন ভাসে।
সুমধুর পৃথিবী ধূসর বর্ণমালা
প্রাচীনতম হায়ারোগ্লিফিক্সে লেখা পদ্য বলে
মনে হতে থাকে। সহস্র বছর লাগে পাঠক জন্মাতে।
কষ্টে স্লোগানে মনে হয় পৃথিবীর সবটুকু সত্যি
মরুভূমি বুকে ভাস্কর্য হয়ে আছে।

‘ভালোবাসো না’ এমন নির্মম সত্যটাকে,
নির্মম ‘না’ কে, মনে মনে পাল্টে দিতে- ভালো লাগে।
মিছেমিছি মনে করি পেয়ে গেছি সব;
মন আজ বলে দিয়ো তারে ভালোবাসো তুমি।
‘পর কোন মানুষের ভালোবাসা, পর প্রেমিকের হাত
পাবে না ছুঁতেও’, এমন একটা কিছু হোক।
এ রকম অনুভূতি খুব ভালোলাগে।
স্মৃতির মিনার হয়ে মাথা তুলে এ সকল অনুভূতি,
বেঁচে থাক হৃদয়েতে চিরকাল। তবু
‘সাথী হয়ে স্মৃতি কোষে অনন্ত সঙ্গিনী, তুমি হও’,
এমন চাই না আমি।

গোধূলি বিকালগুলো, বৈকালী আবেগ,
আবেশের ভাগাভাগি মনে পড়ে।
চোখ চেয়ে কেটে যেত সোনালি বিকাল,
প্রশংসার পঞ্চমুখে এড়াতো না তিলটুকু।
অবশেষে বলতাম, ‘সুন্দর!’
হাসির আদ্যোপান্ত ঘেরা মুখরিত সন্ধ্যায়
পুরোপুরি ভালোলাগা নিয়ে ফিরতাম আমার গুহায়।

তোমার চুলের ভাঁজে সোনালী রোদ্দুর,
কপালের সবটুকু জুড়ে রূপালি ঝিলিক-
রূপসী নয়নে তুমি দেখো?
চশমার পুরু কাঁচে- বিধাতার দান
সুবর্ণ আলোয় মোহিনীও তুচ্ছ যেনো!
মহীয়সী তুমি, আমি অদৃশ্য অন্ধকার, তবু
‘আমার চুম্বন চিহ্ন ঠোঁটে এঁকে নিয়ে আমারই থাকো’,
এমনই চেয়েছি আমি-তুমি তা দিলে না হতে।

এছাড়াও দেখুন: দিনমান অন্ধ বাদুরের মতো

বিজ্ঞাপন

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 5 / 5. Vote count: 1

No votes so far! Be the first to rate this post.

Author

তন্ময় সাহা(১৯৮৩)–জন্ম বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসাবে খ্যাত কুষ্টিয়া জেলায়, কুষ্টিয়ায় বেড়ে ওঠা, শৈশব কেটেছে, কৈশোরেও তার কুষ্টিয়া আর গড়াই নদীর মাখামাখি। তারপর লেখাপড়া ও কর্মসূত্রে বহুদিন ধরে খুলনায় বসবাস। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজি এন্ড জিনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক, বায়োটেকনোলজিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা হতে। এরপর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সিকিউটিভ এমবিএ (এইচ আর এম) সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও তিনি ‘দি ফ্লেচার স্কুল অফ ল’ এন্ড ডিপ্লোম্যাসি; টাফ্ট ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ডিজিটাল ফিন্যান্স প্যাকটিশনার হিসাবে সনদপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি উপপরিচালক হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক, খুলনায় কর্মরত আছেন। লেখালিখি চলেছে বিক্ষিপ্তভাবে, শখে, আদিষ্ট বা অনুরুদ্ধ হলে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যুক্ত ছিলেন নাট্যদল ‘থিয়েটার নিপূণ’ এবং বিজ্ঞান পত্রিকা ‘বায়োটকের’ সাথে। বই, বাংলা সাহিত্য হলো তার ভালোবাসা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া প্রতিযোগীতায় স্কুল পর্যায়ে পাওয়া সার্টিফিকেট আর উপহারে পাওয়া বইগুলোকে আজও অতি যত্নে রেখেছেন, নিজস্ব বুকসেলফে। মুলতঃ কবিতা লেখার শখ, টুকটাক গদ্য লেখারও চেষ্টা চলে। বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাগুলি সহ সোস্যালমিডিয়া, টুকরো কাগজ আর ডাইরিগুলোর পাতা থেকে অদুর অতীতে লেখা নিজের পছন্দের বেশ কিছু কবিতা মলাটবন্দী করে, আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন হোরাসের চোখ, বিবিধ ঘোড়সওয়ার ও কালো মেম কাব্যগ্রন্থে।

No Comments

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!