Author

তন্ময় সাহা

তন্ময় সাহা(১৯৮৩)–জন্ম বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসাবে খ্যাত কুষ্টিয়া জেলায়, কুষ্টিয়ায় বেড়ে ওঠা, শৈশব কেটেছে, কৈশোরেও তার কুষ্টিয়া আর গড়াই নদীর মাখামাখি। তারপর লেখাপড়া ও কর্মসূত্রে বহুদিন ধরে খুলনায় বসবাস। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজি এন্ড জিনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক, বায়োটেকনোলজিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা হতে। এরপর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সিকিউটিভ এমবিএ (এইচ আর এম) সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও তিনি ‘দি ফ্লেচার স্কুল অফ ল’ এন্ড ডিপ্লোম্যাসি; টাফ্ট ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ডিজিটাল ফিন্যান্স প্যাকটিশনার হিসাবে সনদপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি উপপরিচালক হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক, খুলনায় কর্মরত আছেন। লেখালিখি চলেছে বিক্ষিপ্তভাবে, শখে, আদিষ্ট বা অনুরুদ্ধ হলে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যুক্ত ছিলেন নাট্যদল ‘থিয়েটার নিপূণ’ এবং বিজ্ঞান পত্রিকা ‘বায়োটকের’ সাথে। বই, বাংলা সাহিত্য হলো তার ভালোবাসা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া প্রতিযোগীতায় স্কুল পর্যায়ে পাওয়া সার্টিফিকেট আর উপহারে পাওয়া বইগুলোকে আজও অতি যত্নে রেখেছেন, নিজস্ব বুকসেলফে। মুলতঃ কবিতা লেখার শখ, টুকটাক গদ্য লেখারও চেষ্টা চলে। বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাগুলি সহ সোস্যালমিডিয়া, টুকরো কাগজ আর ডাইরিগুলোর পাতা থেকে অদুর অতীতে লেখা নিজের পছন্দের বেশ কিছু কবিতা মলাটবন্দী করে, আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন হোরাসের চোখ, বিবিধ ঘোড়সওয়ার ও কালো মেম কাব্যগ্রন্থে।

জীবনটা ফুরিয়েই এলো

আমি এক ভালো জীবন চেয়েছিলাম, ঈর্ষায়, সংশয়ে দোলা কোনো দ্বিমুখী জীবন চাইনি। উন্মত্ত ঝোড়ো আবেগ অথবা দেয়ালে ঠেকা গতিহীন পিঠ নিয়ে বয়ে চলা জীবন, কোনো ভালো-জীবনের উদাহরণ নয়। এমন একটি জীবন চেয়েছিলাম আমি যেখানে স্বাধীনতা অঙ্কুশময় নয়, অস্তিত্বহীন নয়, নির্লিপ্ত নয়, ভালোবাসা কোনো স্থবিরতাকেই প্রশয় দিয়ে বুনো নেংটো নৃত্য করায় না। এমন এক জীবন আমি চেয়েছিলাম কোনো ক্ষেদ, নির্বোধের পাগলামী,…

মিছিল

রাস্তায় যেতে যেতে মিছিলে আটকে গেলাম। এ মিছিল বিজয় মিছিল নয়, দাবি আদায়ের নয়, শোভাযাত্রাও নয়। মিছিলের শ্লোগান প্রতিবাদের নয়, বিক্ষোভেরও নয়। মিছিলের শ্লোগান ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতেও হচ্ছে না; জানা হয়ে যাচ্ছে। নীরবে ঘুমানো এই মৃতের মিছিলে- “আপনি এখন যাচ্ছেন; একটু পরে আসছি আমিও ।” Download PDF বিজ্ঞাপন

ছেলেবেলা

একফালি করুণ-সুর আছে, বড় চেনা সেতারের সুর আমার, জীবনের প্রথম সঞ্চয়, গাঁথা– ব্যথা হয়ে রয়ে গেছে বুকে। সে ছিল নিতান্ত মলিন– বাজারের ব্যাগে তেল মশলার সাথে, একই থলেতে এসেছিলো; মাখামাখি হয়ে আনন্দ আনন্দ বলে এসেছিলো। সে আমার প্রথম বাঁধাই করা কবিতার খাতা। ডায়রিটা হাতে নিয়ে মহানন্দে বলেছিলাম ‘বাবা, তুমি এতো ভালো কেন!’ বাবা, তোমার কি মনে আছে? এখানে ‘হয়তো’ কথাটির…

ব্যস্ততম মধ্যরাতে

ব্যস্ততম মধ্যরাতে নগরীর ব্যস্ততম নারী মেতে ওঠে ফুল-শয্যায়, বসন্ত বাহকের চাপে পিষ্ট সুখ ক্রমে ক্রমে বিষাদ হয়ে ওঠে চাপা উত্তেজনায়। গিরিখাদের সৌন্দর্য আর শিল্পিত পথ উৎপাতে, যাতনায় খুঁজে নেয় আনন্দ বিশেষ। আলিঙ্গনে আবদ্ধ পাখি খুঁজে নেয় নতুন আশ্রয়। শূলবিদ্ধ দু’জন মহাসুখে কামনার ঝরনা ঝরায়। আলো নেই, অন্ধকার, সীমান্তে কেউ কেউ প্রকাশ্যে কামদেবতার বাজায় কলিংবেল– এই নিঝুম অথচ ব্যস্ততম মধ্যরাতে। আরো…

সময় চাই না তোমাকে চাই

বিচিত্র মন তোমার, এই বললে সূর্য ওঠে পুবে, এই বলছো সূর্য ডোবে ডোবে। এখন দুপুর, বলেছিলে কিছু আগে; আবার বলছো বেলা নাকি অস্তরাগে। তুমি বললে, “সময়কে বুঝতে দিচ্ছি না, দীর্ঘ নাকি অতি অল্প আয়ু নিয়ে এসেছিলে।” আসলে, তুমি পাশে থাকলে চোখের নিমেষ রাত্রি ভোর হয় দুপুর নিমিষে রাত দুপর হয় । অপেক্ষার পালা হলে, সকাল-সকাল সকাল হয় না যেন, বিকেলগুলো…

ঠোঁটের পদ্য

অদেয় কিছু-ই নেই; কিছু নেই না দেবার মতো। মোহ অথবা প্রেমে, ভেবে অথবা না ভেবে কেবল একটি চুম্বন সে দেবে না। প্রথমে নিষেধ, তারপর অনুরোধ, অতঃপর বিদ্রোহ! এভাবেই রচিত হয় একটি ঠোঁটের পদ্য। শত শত চুম্বন দিয়ে চুম্বকের মতোই টেনেছি। থরথর কেঁপেছে হৃদয়, শতবার পেষণ করেছি বুকে, লজ্জায় লাল হয়ে গেছে দেয়নি তবুও, বাহু থেকে বুকে উপত্যকায় খাঁজে নেমেছে আঙ্গুল…

কতদিনের ক্ষুধার্ত দেখেছো তুমি?

এমন অসহায় কখনও লাগেনি আগে! কেন অনুভব বন্ধনে বাঁধে? আমি কেন অস্থিরতায় মরি? আমার প্রেমিকারা টেবিলের এক কোণে চুপচাপ বসে ছিলো। কত রাত র্নিঘুম কাটিয়েছি হাতে নিয়ে প্রেমিকার বাড়ানো দু’হাত। রাতভর ব্যবচ্ছেদ শেষেও ভোর-ভোর অনেকেই এসেছিলো । আজ কেন ও সকল লাগছে না ভালো? প্রেমিকার ফুরোয়নি রস। কথা ফুরোলে আর কেউ বলুক নাহয়… কতদিনের ক্ষুধার্ত দেখেছো তুমি সাত দশ ত্রিশ……

মুক্তি

পুরোনো অনাবৃষ্টির পর বৃষ্টি এলে, ভরলো কি খাল-বিল, ডোবা-নালা সে বিচার কে করে? মুক্তির প্রয়োজনে, মুক্তির ছোট-বড়, আমিও করি না বিচার। আরো পড়ুন: সাধ নেই বিজ্ঞাপন

সাধ নেই

আর কোনো অবসাদ নেই আর কোনো প্রাপ্তিও নেই আর কোন প্রত্যাশা নেই, নেই দ্বেষ, নেই খোঁজাখুঁজি–বিড়ম্বনাও নেই। অনেক অন্বেষণে ইচ্ছে মরেছে, চক্ষু বোঁজার ইচ্ছে মরেছে র্দীঘ অনিদ্রায় । কোনো সুরে-ই গান আর হবে না; কোনো কবিতা-ই  হবে না আবৃত্তি আর। জ্বলুক, মরুক, নিভুক, বাঁচুক–ফিরে আর দেখাদেখি নেই। অনন্যকান্তির সাথে বিশ্রীর শত্রুতা শেষ; হবে না পালন কোনো দিবস বিশেষ । আরো…

দুঃখ থেকে গেলো

দুঃখ থেকে গেলো; তোমাকে খুঁজে পেলাম না। আলোয় খুঁজেছি, খুঁজেছি অন্ধকারেও– হাতড়ে খুঁজেছি, সাঁতরে খুঁজেছি, অলিগলি, আঁতিপাঁতি, মনে মনে, গভীর দর্শনে খুঁজেছি। পুনরায়… গহন বনে একটা পিঁপড়ে যেমন; আচ্ছন্ন ঘুমে পিনপতনের শব্দ যেমন; মজুরের কলের গানে কাশির শব্দ যেমন–উপেক্ষিত, তেমনই উপেক্ষিত আত্মার অস্তিত্বে তোমায় খুঁজে-খুঁজেও: পেলাম না । একটাই দুঃখ থেকে গেল মনের গহনে: তোমাকে খুঁজে না পাওয়ার। আরো পড়ুন:…

error: Content is protected !!