Category

সকল কবিতা

কবি তন্ময় সাহা এর সমগ্র লিখনি পেতে আমরা আছি আপনার সাথে। কবি তন্ময় সাহা রচনা সমগ্র দেখুন এবং পড়ুন।

রাতদুপরের পঙ্ক্তিরা

আজকাল, আর কেউ ঘরে ফেরে না । মাঝ পুকুরের পর, চলে যাওয়া, ফিরে আসা: কিইবা তফাৎ? কতোরকম শেকড় থাকে! পুরনো শেকড় ছেঁড়া অবসরে, গজাবে সে নতুন শেকড়। আফ্রোদিতি, তুমিই কি জানতে, এই তুমি, আর আমায় চিনেও চিনবে না, অথবা আমাদের বলে কোনো শব্দ, থাকবে না! জেনো হেপাইসটাস কুশলেই আছে, ভালো আছে, তবু হেপাইসটাস মাঝে মাঝে নিরর্থক দুঃখ বিলাস ভালোবাসে। মিছেই…

সকলেই ডানা ভাঙে

যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো রাজপুত্তুর, গল্পেরও সেখান থেকেই শুরু। হাজার হাজার ক্রোশ দূরে ঈশান কোণে অতল জলের তালপাকানো পুকুরগুলো ছিলো। সোনার কলস ডুবে ছিলো গল্পের বিষাক্ত পুকুরে। আলো করে স্বর্ণকলস ফড়িংয়েরা ছিলো। ফড়িংয়েরা বুকে করে রেখেছিলো রাক্ষস-প্রাণ। আয়না বলল, “এক নিঃশ্বাসে ডুব দিয়ে যদি ওই অত্তগুলো কলস তুলে এই এত্তোগুলো ফড়িং মারতে পারো, তবেই রাক্ষস মরবে; তবেই রাজকন্যার মুক্তি।” “রাজপুত্তুর, কী…

আমার মাত্র সতেরো

সাত থেকে সতেরো, সতেরো থেকে সত্তর কত কী যে যায় আসে, অথবা কিছুই আসে যায় না! এক-ই অনন্ত, হায়!, অনন্ত মানেও এক, এ কুহেলিকা চোখে ভাসে, অথবা ভাসে না। জীবন অথবা মৃত্যু, রহস্য, প্রকাশিত দিবালোক, কবি সব ভালোবাসে। অজস্র মৃত্যুর সামনে, অসংখ্য পলাতকের মাঝে পালাতে যারা চায়: তারা তা পারে না! পালানো কি সাজে? আমার দাসখত আমিতো দেখিনি চোখে। মাযাবী…

আত্মসমর্পণ

কালের রাবণ আমি। স্বার্থক তোমার দ্বন্দ্ব যুদ্ধ আহ্বান। বিস্মিত প্রতিবিশ্বের সাথে করেছিলে কোন অঙ্গীকার তুমি, বিধাতা, ভুলে গেছো কি! যতোদূর মনে পড়ে যোদ্ধা-ই আমি, তোমার হাতেই আমার ভাগ্যরেখা। আদি ও অনাদি, ভূত ও ভবিষ্যৎ, জয় ও পরাজয় কোনো শব্দ তোমার জন্য নয়; বিজয়–আমার মরণে। চলো, আর একবার মরি, আরো একবার মরি, ক্ষণে ক্ষণে মৃত্যুর সাথে– যুদ্ধই করি! আরো একবার মরি।…

কবিতার মৃত্যু আমার সাথে

কবিতার কোনো শর্ত নেই, খেতে কি পড়তে চায় না, গাছেরও শর্ত আছে জল হাওয়ায় বাড়ে, নতুন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে দাঁড়িয়ে শৈশব মরে বেঁচে যায়। কবিতার মৃত্যু আমার সাথেই হোক, অথচ হারিয়ে যাওয়া পুরোনো কবিতাগুলি সার হয়ে মিশে গেছে, আমার আগেই। কবিতা, একটু দাাঁড়াও আমিও গাছের খাদ্য হবো, মাশরুম চাষ হবে আমাদের ভষ্মে ও পচানো জৈব সারে। একটু অপেক্ষা করো, একটু…।…

দেশি গেঁটে বাত

বয়েসী বাতে গিঁটে গিঁটে ব্যথা ধরে গেছে। আজন্ম দৌড় ঝাঁপে, শিশুর কোমর আজ রসবাতে টসটসে । এসো না কোমর টিপে দিই, বুকের পাঁজর গুনি এসো না শরীর ঘেঁটে দিই বলিষ্ট বাহুর পেষণে। এ সকল এখন আর নবাগত শীলহানি নয়। এ সকল এখন আর অপবাদের উৎস-ও নয়। এ সকল গেঁটে বাত, আমবাত, রসবাতে– উপশম। তোমার-ও-তো গিঁটে গিঁটে বাত ধরে গেছে, আমারও…

স্মৃতিস্তম্ভে একদিন

মৃত্যু তোমাদের কষ্ট পাবার অধিকার কেড়ে নিল, নতুবা তোমরাও কষ্ট পেতে পারতে। একপাল পোষাকি মানুষের ভিড়ে, আসল মানুষগুলোই এখনো যে নেংটো থেকে গেছে, দেখতে পেতে। অসভ্য ওদের বের করে দিল সভ্যরা! অসভ্যের স্মৃতিস্তম্ভ লাগে না। অসভ্য আর স্মৃতিস্তম্ভে যাবে না। আজকের স্মৃতিস্তম্ভ ফুল আর জ্বলন্ত মোমবাতি শোভিত, বড় বেশি দেশপ্রেম যোগায় শহীদের ক্ষনিকের মা, একদিনের বাবারাও চোখের জল ফেলে! নেংটো…

লাল নীল গুটি সুতো

বটগাছটার তলায় কখন যে ওরা দাঁড়ালো জংলী মানুষ সেজে, পাঁজর ছুয়ে হাতে! পেঁচিয়ে ধরে বটগাছটার ঝুড়ি দোলনা দোলার সময় বয়স যখন পেছন দিকে হাঁটে, হাটে, মাঠে, ঘাটে পিটিয়ে দিলাম ঢেঁড়া শোন, বটের ঝুড়ির কোলে দোল খাবে আজ শিশু।” আমরা এখন চোখ বুঁজলেই বাঁচি, পেঁচানো শেষ সকল গুটি সুতো। থাকবি তোরা লাল নীলেরা এ যে আমার ছুটি নেবার ছুঁতো। ও ভাই…

আমাদের এঁদোগলি

ভাগ্যিস আমাদের এঁদো গলিটায় মোটর গাড়ি ঢোকে না, তা না-হলে কাছা দেয়া লুঙ্গি চোর ভোট চাইতে পায়ে হেঁটে না এলে, আমাদের গুরুজনদের সম্মান যে লুটাতো ধুলোয়। ভালো ভালো পাস দিয়ে এ গলির রত্নরা এখনও বেকার, তবু বগল ছাতার ঐতিহ্য ভোলেনি কেউ। ছাতা ফোটালে এ বাড়ি ও বাড়ির দেয়ালে বাঁধে ছাতা । এখনও দু’চারজন চটি জুতো হাতে নিয়ে হাঁটে। রাস্তার জমাট…

চিঠি অতঃপর

কাউকেই বিমুখ হতে হবে না; চলতে হবে না অনিশ্চিত কোনো পথ, এখন থেকে সব দায় আমার, আমরা ভালো থাকবো। গত মাসে প্রফিডেন্ট ফান্ডের টাকা-টা পেয়েছি; বহু চিন্তা-ভাবনা করে পেনশন বেচে দিলাম । যতোটুকু দায় আমার প্রতি মনিবের ছিল সবটুকু চুকিয়ে দিয়েছি। ব্যাস! তারাও এখন দায়মুক্ত । চাকরিটায় ইস্তফা দেয়ার পর বুঝলাম, অনেকটা সময় চলে গেছে পরপারে । চলে গেছে সোনালি…

error: Content is protected !!