Category

হোরাসের চোখ

অনুগল্পের পর

শেষবার ভালোবাসার পর, বুকে ব্যাথাটা কমলো-ই না! জবড়জং-কোটটাকে ফুটপাত থেকে কিনে ঢেকে নিয়ে হৃদয়, দেখো-তো আমিও কেমন কথা দিয়েই ফেলেছিলাম! ঢোলা পা’জামার সাথে কুঁচকানো কোটের যে ‘নিবেদন’ তুমি দেখতে পেয়েই হেসে উঠেছিলে, চিনতে পারছো আমিই সেই ‘ব্যাথা লুকোনো সুবোধ’? তুমিতো বুঝেছিলে অথচ আমিই- বুঝতে পারছিলাম না: ‘সদ্য কেনা কোটটায় আমাকে মোটেও মানাচ্ছে না’। যে তোমাকে নিয়ে গিয়েছিল সে-তো তখন বেশ…

অমরাবতীর সিঁড়ি

আবদ্ধ কুঠুরিতে নয়, যে সমস্ত অসমতল নিবাসে পৈত্রিক কিম্বা ত্রিমাত্রিক সুগন্ধী চুঁইয়ে পড়ে কেন জানি না তাদের সাথে মৃত্যুরও আছে নিবিঢ় যোগাযোগ। অর্থাৎ ব্যক্তিগতভাবে যে কেউই সচরাচর সেখানে মরে যেতে চাইবেন। সিদ্ধান্ত এই যে, মাতৃ কি পিতৃভূমিতে আছে আমৃত্যু অমরাবতীর সিঁড়ি। অথচ একদা পিতা তার পৈত্রিক নিবাস হতে স্বেচ্ছায়, পর-ইচ্ছায়, প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে অথবা মিশ্র কারণে নির্বাসন নিয়েছিলেন অথবা হয়তো তিনিও…

আকাঙ্ক্ষার বাইরেও কিছু থাকে

যদিও যতবার বিধবা হয়েছি ততবার তুমি-ই জন্মেছ: এমনটা নয়। তবে, সম্পর্কিত প্রতিটি পিতার কখনোই অতোটাও সন্তানাকাঙ্খা ছিল না, যতোটা আকাঙ্খা ছিল প্রকৃতিকে উলঙ্গ করার। ক্ষেত্রজ ফসলের মাঠে যা সত্য, মুলতঃ গর্ভেও তা-ই। বিবিধ সময়ের চাপে,  আকাঙ্ক্ষার বাইরে, ক্লান্ত হলে অথবা কেউ হঠাৎ তোমার অস্তিত্ব টের পেয়ে গেলে: কী আর করার আছে? কী আর করা…! উড়ুক্কু জীবনে অনেকতো হলো, এবারে নাহয়…

পোস্টমর্টেম

জামাটা গায়ে থাকতে সেলাই দিতে, আমি কখনোই বলিনি। ছেঁড়া নিয়ে আমার কোনো আপত্তিও নেই, যতটা আপত্তির: ‘সেলাই করা বুক’। এই জোড়াতালি-বুক আমার নয়: হতেই পারে ছেঁড়া ও জীর্ণ। Download PDF বিজ্ঞাপন

বিষহরা বিকেলে একজোড়া চোখ অথবা চাতক

তোমার গান অসাধারণ ছিল। এযাবৎ সনাক্ত করা, যে সকল কথায় তুমি গানগুলো গেয়েছ সেখানে আমার কবিতাদের একজনও ছিল না। তব্ওু আমি রেখে যাচ্ছি আমার অনেকগুলো লাইন আর তোমাকে। Download PDF বিজ্ঞাপন

বাল্য-বিধবার পতিদেব

অনুমানে সে আমার বৃদ্ধ বয়সের একখানা ছবি আঁকিয়ে-ও তো নিতে পারে! তা নয়, টগবগে যুবকের ছবি আকড়ে ধরে কেমন কাঁদছে দেখ! কাঁদ! ছিয়াত্তরে বুড়ি, কাঁদ! অথচ যখন আমি এলাম, কই তখন তো এলি না! (আহ্! আমরণ স্বামী বলে কথা। থুত্থুরে বুড়ি গো, কাঁদো, কাঁদো তোমার বুড়োর জন্য?) প্রিয়তমা, আমি কোন চির যৌবনা রমনীর দেখা পাইনি। অথচ তোমার কপালখানা দেখো আমি…

নির্বাসন

ফিস্টের পর: পোষা ডেগি মোরগটা কোঁকর-কোঁ কোঁকর-কো করে, আর জ্বালাচ্ছে না। বন্ধুদের আমিই বলেছিলাম, ‘আমাদের জন্য একটা লালঝুঁটিওয়ালা, ইষৎ খয়েরী, প্রায় বয়স্ক, উপকারী মোরগ আছে।’ বস্তুত, ওদের কেউই ওটাকে যাদুঘরে রাখার ব্যপারে সম্মত হয়নি। Download PDF বিজ্ঞাপন

কম্পনে কোন উত্তাপ নেই

মরে গেছি কিনা জানতে আমার নাকে কিছুটা কার্পাস তুলা গুঁজে দেয়া যেতে পারে; খুব বেশী কৌতুহলী কেউ বুকের সামান্য বামপাশে কান পাততেও পারো। অথচ… একদিন মেয়েটা ভুল করে ঠোঁট ছুঁইয়ে জানতে চেয়েছিলো আমার শরীর উত্তপ্ত কি না। Download PDF বিজ্ঞাপন

নশ্বরের ইতিহাসে ক্ষয় ও অধিগ্রহণ

বাড়ির ছাদে ট্যাংকির পাশ দিয়ে বটগাছ যখন মাথা তোলে প্রকৃত অবহেলাটুকু বোঝা যায়। ঝাড় যত বড় তত বেশি ডালপালা, অবহেলা ততটাই বেশি। তেপান্তরের মাঠে যে রমণীরা বট-পাকুর-অশ্বথ দেখে খুশি হতো, ইচ্ছে পুরণ সুতো বেঁধে আসতো বাড়ন্ত ডালে: ছাদে অথবা কার্নিশে এমনকি পুরনো ট্যাংকির পাশেও গজানো বটগাছ দেখে তারাই-বা কী বলবে? অথচ ওরকম দেখেও কেটে দিতে মায়া হয় গো! বট সমান্তরালে…

যে প্রেম আমি বুঝতে পারিনি

এবারে তুমি এলে তোমার জন্য গোড়ালি জল কাদা ভেঙে শুষনি শাক তুলবো: ও জলের পাড়ে জোঁক আছে খুব, তব্ওু যাব। আঁচল দিয়ে ছেঁকে, স্থির হয়ে থাকা স্বচ্ছ জলের নিচে হাতড়ে হাতড়ে যেক’টা মাছ আমি পাবো, গেল গ্রীষ্মে মানুষের ক্ষেতে সর্ষে তোলা শেষ হলে ক’টা সর্ষে আমিও কুড়িয়ে পেয়েছি; তলানির কাইট চিপে হলেও- মাছক’টা ভেজে আমি দেবো-ই। আমার যে স’ই রোজ…

error: Content is protected !!