অপ্রিয় ঊরুভঙ্গ শালিক

কি নিখাঁদ, কি নিখুঁত-ভালোই না তুমি! চুপচাপ-তিরের মতোন ধনুক ফলায় তুমি জুড়ে ছিলে। একদিন পিতাও: ছুঁড়ে দিলে, তুমিও চুপচাপ তীব্র বেগে বুকে এসে বিঁধে গেলে! এর চেয়ে ঢের ভালো পাখি: হতে তুমি পারতে। এর চেয়ে ঢের বেশি সুকুমারী: তুমিও পারতে হতে। অথচ, তুমিও ক্লীব-ই হলে। তুমি তির হলে, বিদ্ধ হলে না! পাখি হলে, উড়লে না তুমি! ঊর্ধ্বে অপ্রিয় যে ‘ঊরুভঙ্গ…

গুটানো হাতের ভাঁজে

চোখ মোছা শেষ হলে বলো, ওটুকু সময় তুমি চাইলেই পেতে পারো ধার। এর চেয়ে বেশী? দুঃখ অপার? অতোখানি সাগর যে সাথে নেই! নেই হাতে অতোটা সময়। মনে আজ গতিহীন যুগ? চেয়ে দেখো হয়ে গেছি শামুকের ছায়া! তব্ওু চুলের রঙ থেমে নেই! গুটানো হাতের ভাঁজে বুকে চেপে ধরেছিলে সুকঠিন হাত। হাত দু’টো খুব বেশী চেপে আর রেখো না; তিলে তিলে হাড়ের…

হৃদয়ের ঘ্রাণ

আজ যদি জানো, ‘দীর্ঘ-নিশ্বাস ফুঁড়ে উড়ে যাওয়া পরিযায়ী শ্বাস মরে পড়ে আছে! ‘মরুভূমি-বুক তার’ বালু এসে ঢেকে দিয়ে গেছে।’ নীথর পাখির দেহ ছুঁয়ে তুমি: শোকে ডুবো না গো। অতোখানি পোষ মানা নদী কোনোকালে ছিলো না কবি-র! আজ যদি জানো, ‘বিলাপের সুর শুনে নয়, সানাই শুনেই মুগ্ধতা নিয়ে কবি এসে ফিরে চলে গেছে। অভিযোগে অভিশাপ নয়, দিয়ে গেছে হৃদয়ের ঘ্রাণ: এরকমও…

দায়

কে আর বললো বলো আমাদের কথা। শীল গাঁয়ে রাতভর খোসাহীন… যম শীত পার করে শেষে প্রায় মরে আছি সে সময় কুয়াশা শিশির! (মরণের এই ব্যথা শীতকাঁটাময়।) কুয়াশার জলে ভেজা হিমেল হাওয়ায় মৃত্যুর রূপে দেখি ‘যমদূত’… তব্ওু যুদ্ধে বাঁচি! কাকভেজা-সুখ ছুঁতে ছুঁতে বুঝে গেছি, ‘তুমিই জীবন।’ (কোমলে কঠিন এক ফুলেল পাষাণ!) কে আর শুনছে বলো আমাদের কথা, এতো কার দায় আছে…

আয় ফুঁকে দিই

খাঁচা তোর তুই নিয়ে যা! মমি করে রাখ, কোনোকালে খাঁচা যদি হয়ে ওঠে বুক- জানাস। কথা দিলাম, ‘দ্বাবিংশ শতাব্দীতেও কোনো তির বুক তোর ছোঁবে না!’ এমনি এ খাঁচা: যথেষ্ট বিলাসী সে নয়, মমতার রেশ এতে লেগে নেই, কালজয়ী জোৎস্নায়ও এ প্রাচীর ছিঁড়ে-ফুঁড়ে ফোটে না বিভাস। খাঁচা! জেনে রাখ, “বুক সর্বপরি ‘সত্য’ ও ‘বিতর্কিত’।’’ আয়, আয় ফুঁকে দিই ‘জীবন সুখের জ্বালা!…

যেতে হবে এমনই কফিনে

মুগ্ধ হতে হ’লেও, আবর্জনাকে ছাড়িয়ে যেতে হবে… খুব বেশী লোকালয়ে, খুব ঘন বনে, লবন সাগরে, অরণ্যে, গহণে অথবা দূর্গম পবতের্র, শিখরে বা চূড়ায় নয়, লোকালয় অথবা মানুষের খুব কাছে নয়, অতি বেশী আড়ালেও নয়, যেতে হবে ত্রিকাল কফিনে। অথবা ইষৎ শীতল ডুবন্ত-সূর্যের কাছে তুমি যেতে পারো। জেগে ওঠা শিখতে: যেতে পারো ভোরের কাছেও। হায়, আজও আমি হাই তোলা থামাতেই বিছানায়…

কাঠপুতুলের দাঁত

যন্ত্রণা হয় (আর্থার র‌্যাঁবোর মতোই)! হেসে ওঠা কাঠপুতুলের দাঁত মেঘ হয়ে স্নায়ুর গহনে গুরগুরু করে, বিজলীরা অল্পেই চমকায়। জাগিয়ে তুলেও প্রেম প্রিয় ইশারায় কেন যেনো জনমের ক্লান্তি গ্যালো না! হাই তোলা আফসোস বয়ে খুব-ভোরে হ্যাংলোরা ঘুরঘুর করে। যন্ত্রণা হয় (আর্থার র‌্যাঁবোর মতোই)! কবি-রা তো ভাই ভাই, না? থিয়োদর দ্যাঁ ব্যভিলর শুনুন, ‘ফিরতি চিঠির সেই খামটাকে আমিও খুলেছি !’ কিশোর র‌্যাঁবোর…

যে পিঞ্জিরায় পালঙ্ক নেই

পিঞ্জিরা থাকলিই ঝামেলা! এই খোলো রে, এই বন্ধ করো রে- কাক্ কাক্ যে রাখি, কাক্ কাক্ রাখপো না, কারে কোনে থোবো, কিডা না কিডা কোনে না কোনে যায়ে ঘুমাবি! কোন কুনায়- হয়, পিঞ্জিরা আমার একখান আছে বটে তয় পালঙ্ক তো নেই! একগাদা চ্যেলা কাঠ গাদা মারাই সার- চ্যেলা কাঠে পালঙ্ক হয় না, চিতে হয়! ও পিড়িতি শুবা? Download PDF বিজ্ঞাপন

একটি প্রেমিক কবিতা

একদল তরুণ যখন উৎফুল্ল বৃদ্ধরা তখন ক্যালেন্ডারের পাতায় বয়স গুনছিল। সাহসী কদম ফুলগুলো খোঁপায় গুঁজে কোন কোন তরুণী এগিয়ে আসতেই সলজ্জ যুবকের চোখমুখ অন্য রকম আনন্দে ঝলসে গেল। কারা যেন ছি ছি করে উঠল! এখন আমি নিশ্চিত, ‘ওরাই তারা: যারা চেয়ে পায়নি।’ ওদের এখন ‘আঙুর ফল: টক’! উৎফুল্ল তরুণীদের অনেকগুলো প্রস্তাব দেবার পর কিছু প্রস্তাব গৃহীত হতে হতে হলো না;…

তোর হাত কার হাত

চুড়িগুলো কিনতে পারলে, তোকে জানাবো। হাত দু’টো তুই গুটিয়ে নেবার পরও সদ্য বয়ঃসন্ধির সাড়া জাগানো সতেজ অনুভুতি রয়ে গেছে একই রকম। যে হাতের মাপে চুড়িগুলো কেনার প্রচন্ড ইচ্ছে ছিল, ওই হাত না পেলেও চুড়িগুলো নাকি দিব্যি যাবে কেনা !- ‘সব প্রেয়সীর হাত’ সেগুলো নাকি একই? একই রকম স্নিগ্ধতা সকলেই ছড়াতে সক্ষম! তোর হাত কার হাত? কার হাতে তোর হাত জমা…

এখানে তন্ময় সাহা এর 458 টি কবিতা পাবেন

error: Content is protected !!