হৃদয়ের যত্ন নিন

দুঃখিত, মুখোমুখি প্রেমের গল্প শোনাতে পারছি না। এখন মুখোমুখি শুধুই ডাল—ভাত … ভুলে গেছি অন্তরঙ্গ সংলাপ। কেবল জীবনের জন্য হে আমার অবাধ্য মন জেনে নাও, “জীবন যেখানে যখন যেমন”। ভালোবাসার কেবল “রোটি, কাপড়া, মাকান”। মানুষকে ভালোবাসে পাগলে! কারো কারো স্বপ্ন থাকে নীড় বলে থাকে কিছু শুনেছি ফেরবার তাড়াও নাকি থাকে! সকালের নরম রোদ সেই যে নিয়ে গেল যাকে, গোধূলির লালচে…

বালিহাঁস প্রেম

এর চেয়ে ঢের ভালো আমাদের প্রাণের শহর! এখানে আমরা সকলেই পাপী, সকলেরই নীচু জাত, সকলেই অচ্ছুৎ, এখানে অচ্ছুৎ অনাত্মীয়ের গলাগলি। আমাদের চোখে মুখে লেপ্টে আছে অধরা সুখ। পাইনি বললে পায়নি কেউ’ই, নেই বললে কারো নেই, শবযাত্রায় সকলেই হাঁটি, একছন্দে! এখানে তেষ্টা আছে, আছে ক্লান্ত ধুলোর বাতাস মৃদুমন্দ। কেউ জানে না নীহারিকা, তোমার বুকে নষ্ট মদের গন্ধ। কী আর দেবে তুমি,…

নির্জনতা চাইতে মহাশূন্য

কন্যেরা অষ্টাদশী হচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে, আর আমি বিশ, ত্রিশ, চল্লিশ… বাড়তি দূরত্বটকুর, যত্ন করতে করতে একদিন শেষ আরতির সময় হয়ে গেলেও, কন্যেরা অষ্টাদশী হতেই থাকবে, হতেই থাকবে। একান্ত নিজের বলে মৃত্যু ছাড়া কিছুই নেই। সুদীর্ঘকাল পর; রমণীমোহন জানলেন, রমণীর বুকে মহুয়া ফোটে না। দু’চোখ মেলে চেয়ে থাকলেই জোৎস্না দেখা, যায় না। কারিগর যখন বললেন কি চাও? কিচ্ছু বলতে পারেনি সে।…

ধান বন্যার কাব্য

“কাঁদিস? ক্যান! তয় কি মোচড় দেয় বুকের ভেতর, মনডা পুড়ায় আমার জন্যে?” “অনামুখো মিনষে, খিদেয় মোচড় দেয় মরার পেট, পেট পুড়ায় ভাতের খিদায়, খালি পেটে পিরিত জমাস ?” জীবন মানে ধান বন্যার কাব্য, না পিরিতির গান। ভাত দিবি, ভাত? ক্যান দানায় দানায় দানব কষে ছক? হয় ক্যান ভর্তি পেটের মত্ত অহংকার? লুটোয়ে পায় ভিক্ষে চাওয়া ভাল্লাগে না আর! যদি পাওনা…

যার যার বাঁক ভালো লাগে

যার যার বাঁক ভালো লাগে, নদী অথবা নারীর, এক নদী বেয়ে আরেক নদীর কাছে পৌঁছে যাও। নারী কি পারে নদীর কাছে, পৌঁছে দিতে? নারীও কি পারে? গভীরতার গল্পে, বয়ে চলার গল্পে, পঙ্কিলতার গল্পে, কোথাও স্থির হওয়া মানেই মৃত্যু তো বলা নেই! ধৈর্য ধরো নদী, শুনবো তোমার গল্প। আমি একটু, নারীর বুকে ডুবে পূর্ণ হয়ে আসি! একবার ঠোঁট থেকে বিষ কিনেছিলাম,…

ওরা অনেক কিছুই বোঝে বালক

ওরা অনেক কিছুই বোঝে বালক, ওরা গাছতলা আর ছাদনাতলার পার্থক্য বোঝে। রাজকুমার আর ভিখারি বোঝে। নাকের নথ আর অনামিকার আংটি বোঝে। কোন পুরুষের ছেলে হবে, কার গায়ের গন্ধে কড়া চুরুট ম্লান হয়, কে ভবিষ্যতের তীব্র নাক ডাকিয়ে হবে, কে গোলাম, কে স্তিমিতনেত্র, কে যোদ্ধা, সব সব ওরা জানে। সর্বপরি কতোটা সুন্দরী হলে কী জোটে তার সবিস্তারে পরিসংখ্যান আর হিসাববিজ্ঞান তারা…

বালিহাঁসের পায়েও শেকল

অতএব আসুন নতুন করে প্রেমে পড়ি, বিবর্ণ জীবনে কিছুটা নতুন রং লাগুক আবার, শুকনো মরুতে শ্রাবণের ধারা নামুক, আমাদের হাত ধরে থাক পুরাতন হাত, সুখেরা চক্রাকারে ঘুরুক শনির বলয়ের মতো। ক্ষীরের পুতুল পা থেকে মাথা, অমৃত সকল অমৃতে অরুচি আমার নেই, ত্রাতা প্রেম দাও। আমরাতো প্রেমে পড়তেই পারি। অযথা জানতে চেয়ো না, “পাখি তুমি ফেরো কোন নীড়ে?” শিকারী বেড়াল সেও…

এইসব মহামারী

আবার গঙ্গাফড়িংয়ের ভেসে চলা জীবনস্রোতের টানে আমরাও, বুকের ভেতর গোলাপী ফুসফুস ভরে বাতাস নেবো। আবার স্বাধীন হবো। আবারো। কেননা এইসব মহামারী আহাজারির নয়, এইসব মহামারী কেবলই স্রোত, আমরা আসিনি স্রোতে ভেসে যাবো বলে। অল্প কিছুকাল, সময়ের চাপে এখনো অক্ষত এই বেদুইন দল একদিন, মিশে যাবে নীরবতায়, এতো ব্যস্ত কেন? নীরবতার অনিবার্যতা মানি, মানি হে বন্ধু, সখা, হৃদয়েষু। তবু দেখে নিয়ো…

টিমওয়ার্ক

“এ কেবল আপনাদের নয়, কেবল আমার নয়, আমাদের সকলের, লেট আস বেটার টু নো, এ কেবল ডিউটি নয়, এ এক অকৃত্রিম প্যাসন, প্রাণপ্রিয়, এটাই টিমওয়ার্ক।” “এভাবেই সর্বোত্তম।” “না না ঠিকঠাক এভাবে নয়, ওভাবে, ওভাবেই কেন নয়?” এভাবেই রূপকল্প, চা নাস্তা ডিনার। “ডাকো হাড়জিরজিরেকে ডাকো, অর্ডার। অর্ডার।” প্রাণপ্রিয়, এটাই টিমওয়ার্ক। “ছোঁ, ছোঁ, অদক্ষ কর্মীর হাত, অতি সাধারণ, অপক্ক, অপটু, উৎপাত। অযথাই…

তুই

এবার তুই ফিরে এলে তোকে নিয়ে কাঁটাবেগুনের ফুল তুলতে যাবো, খালি পায়ে দুপুর রোদে হাঁটবো মাইলের পর মাইল। শ্মশানঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীটার পাড়ে, অবেলায় চুল ছড়িয়ে বসে তুই যতোই মগ্ন হোস প্রকৃিত প্রেমে, আমার অবহেলায় আমি আর মনে করবো না কিচ্ছু। তুই চলে যাবার পর থেকে, বুকের বাঁ পাঁজরে চিনচিনে ব্যথা হলে বড় মনে পড়ে তোকে। বোধহয় এই…

এখানে তন্ময় সাহা এর 456 টি কবিতা পাবেন

error: Content is protected !!