এবার তুই ফিরে এলে
তোকে নিয়ে কাঁটাবেগুনের ফুল তুলতে যাবো,
খালি পায়ে দুপুর রোদে হাঁটবো মাইলের পর মাইল।
শ্মশানঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীটার পাড়ে,
অবেলায় চুল ছড়িয়ে বসে তুই যতোই মগ্ন হোস প্রকৃিত প্রেমে,
আমার অবহেলায় আমি আর মনে করবো না কিচ্ছু।
তুই চলে যাবার পর থেকে,
বুকের বাঁ পাঁজরে চিনচিনে ব্যথা হলে
বড় মনে পড়ে তোকে।
বোধহয় এই ছন্নছাড়া জীবনের তোকেই
বড় বেশি ছিলো প্রয়োজন,
তাই বলে ভাবিস না মধ্যরাতে কাঁদতে বসেছি,
পুরুষ মানুষ আবার কাঁদে নাকি, ছিঃ।
রোজকার মতো এখনো সকাল হয়,
আমিও ঘুম থেকে উঠি,
চশমাটা পাই না বিছানার পাশে খুজে,
সকালের লেবুজলটা দিয়েছি বাদ,
ভাবছি সকালের নাস্তাটাও…
প্রতিদিন নাস্তায় নাস্তানাবুদ হতে কার’ই বা
ভালোলাগে বল।
জামার বোতাম এখনো আটকাতে শিখিনি,
ভাবছি তুই ফিরে এলে শিখে নেবো।
আমার দুপরে কী খাওয়া উচিত,
রাতে ভুরিভোজ করা ঠিক হবে কি না,
আমার পিত্তদোষ, বদহজম সব কিছু জেনে নেবো আবার…
তুই এবার ফিরে এলে।
জেনে নেবো ক’টাকা আয়ে আয়ে ক’টাকা সঞ্চয়।
শোন, কবে নাগাদ চন্দ্রনাথ যাওয়া যায়
জানতে ভুলে গেছি…
এখন আর স্বপ্ন দেখি না,
তোকে ছাড়া স্বপ্ন দেখা যায় ?
আমার বয়সী পিতার চোখ ছলছল,
তার ছিলো মেয়ের বড় সখ।
বাবার রোজকার পুঁথিপাঠ, মায়ের রক্তচাপ,
এমনকি পাশের বাড়ির কাকীমা
কখন এসে পান চাইবেন, শিখে নেবো দেখে নিস,
স্বপরিবারে আর জ্বালাবো না তোকে।
রাতের অল্প শীতের আমেজ
এখন শুধু জন্ম দেয় বুকভরা শ্লেষ্মা,
তুই তো আমার চাদর ছিলি ভুলে গেছিস ?
সকালে বেলাবেলি এখনো তো আমি ধান কুড়াতে
যাই, টুকরি বেঁধে নিয়ে সারাদিনের মতো।
অভ্যাসমতো আমায় বিদায় দিতে
রাস্তায় এসে দাঁড়াতেওতো পারিস!
এবার ফিরে এলে তোকে বলতাম,
আমাকে তোর হাতে সঁপে দিয়ে
বড় বেশি ভুল করেছি।
তা বলে ভাবিস না ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গেছি।
শুধু চোখে জল ভরে এলে কোনো কিছু
ঠিকঠাক নজরে আসে না।
ফিরে এলে শব্দ করিস, ইদানীং জেগেই থাকি…।
No Comments