Category

সকল কবিতা

কবি তন্ময় সাহা এর সমগ্র লিখনি পেতে আমরা আছি আপনার সাথে। কবি তন্ময় সাহা রচনা সমগ্র দেখুন এবং পড়ুন।

বালিহাঁস প্রেম

এর চেয়ে ঢের ভালো আমাদের প্রাণের শহর! এখানে আমরা সকলেই পাপী, সকলেরই নীচু জাত, সকলেই অচ্ছুৎ, এখানে অচ্ছুৎ অনাত্মীয়ের গলাগলি। আমাদের চোখে মুখে লেপ্টে আছে অধরা সুখ। পাইনি বললে পায়নি কেউ’ই, নেই বললে কারো নেই, শবযাত্রায় সকলেই হাঁটি, একছন্দে! এখানে তেষ্টা আছে, আছে ক্লান্ত ধুলোর বাতাস মৃদুমন্দ। কেউ জানে না নীহারিকা, তোমার বুকে নষ্ট মদের গন্ধ। কী আর দেবে তুমি,…

নির্জনতা চাইতে মহাশূন্য

কন্যেরা অষ্টাদশী হচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে, আর আমি বিশ, ত্রিশ, চল্লিশ… বাড়তি দূরত্বটকুর, যত্ন করতে করতে একদিন শেষ আরতির সময় হয়ে গেলেও, কন্যেরা অষ্টাদশী হতেই থাকবে, হতেই থাকবে। একান্ত নিজের বলে মৃত্যু ছাড়া কিছুই নেই। সুদীর্ঘকাল পর; রমণীমোহন জানলেন, রমণীর বুকে মহুয়া ফোটে না। দু’চোখ মেলে চেয়ে থাকলেই জোৎস্না দেখা, যায় না। কারিগর যখন বললেন কি চাও? কিচ্ছু বলতে পারেনি সে।…

ধান বন্যার কাব্য

“কাঁদিস? ক্যান! তয় কি মোচড় দেয় বুকের ভেতর, মনডা পুড়ায় আমার জন্যে?” “অনামুখো মিনষে, খিদেয় মোচড় দেয় মরার পেট, পেট পুড়ায় ভাতের খিদায়, খালি পেটে পিরিত জমাস ?” জীবন মানে ধান বন্যার কাব্য, না পিরিতির গান। ভাত দিবি, ভাত? ক্যান দানায় দানায় দানব কষে ছক? হয় ক্যান ভর্তি পেটের মত্ত অহংকার? লুটোয়ে পায় ভিক্ষে চাওয়া ভাল্লাগে না আর! যদি পাওনা…

ওরা অনেক কিছুই বোঝে বালক

ওরা অনেক কিছুই বোঝে বালক, ওরা গাছতলা আর ছাদনাতলার পার্থক্য বোঝে। রাজকুমার আর ভিখারি বোঝে। নাকের নথ আর অনামিকার আংটি বোঝে। কোন পুরুষের ছেলে হবে, কার গায়ের গন্ধে কড়া চুরুট ম্লান হয়, কে ভবিষ্যতের তীব্র নাক ডাকিয়ে হবে, কে গোলাম, কে স্তিমিতনেত্র, কে যোদ্ধা, সব সব ওরা জানে। সর্বপরি কতোটা সুন্দরী হলে কী জোটে তার সবিস্তারে পরিসংখ্যান আর হিসাববিজ্ঞান তারা…

বালিহাঁসের পায়েও শেকল

অতএব আসুন নতুন করে প্রেমে পড়ি, বিবর্ণ জীবনে কিছুটা নতুন রং লাগুক আবার, শুকনো মরুতে শ্রাবণের ধারা নামুক, আমাদের হাত ধরে থাক পুরাতন হাত, সুখেরা চক্রাকারে ঘুরুক শনির বলয়ের মতো। ক্ষীরের পুতুল পা থেকে মাথা, অমৃত সকল অমৃতে অরুচি আমার নেই, ত্রাতা প্রেম দাও। আমরাতো প্রেমে পড়তেই পারি। অযথা জানতে চেয়ো না, “পাখি তুমি ফেরো কোন নীড়ে?” শিকারী বেড়াল সেও…

ফালতু তাগিদ

শোন, আর কখনো চলতি রেলের চেন ধরে তুই টানিস না। বুট চানাচুর বাদাম ভাজা ডাকিস না। স্বপ্নগুলো দে না উড়ে যেতে, কষ্ট হলেও এক্কেবারেই আমায় মনে রাখিস না। সত্যি হলো, উড়ন্ত বক তুই তো শুধু একলা ভালো-বাসিস না। হাত বাড়ালেই আমায় কেন চাস? তোর দু’চোখে, চৈত্র মাসের ঘোর সর্বনাশ। তোর জগতে আমায় নিয়ে ভাবনা সারি সারি, তোর দু’ধারে নদীর মাঝে…

বাঁচুন

আত্মজার জন্য বেঁচে থাকুন। স্বপ্নের জন্য বেঁচে থাকুন। জনকের কীর্তিতে মহীরুহ হতে অথবা হৃদয়বেত্তা জননীর জন্য অথবা যে সন্তান ভালোবাসে, তার জন্য বেঁচে থাকুন। অতি আদরের বোন, অথবা একাত্ম বন্ধুর জন্য বাঁচুন। পাশাপাশি হেঁটে চলা মানুষ অথবা মনুষ্য প্রজাতিতে আত্মার আপন কেউ নাই বা হলো, গাছ, মাছ, পশু, পাখি, কিন্নর অপ্সরাদের ভালোবেসেই না-হয় বাঁচুন। একটি কবিতার কিছু লাইন আপনার লেখার…

উলঙ্গ

তুই বলেছিলি, “নিপাট ভালো মানুষ ভালোবাসবি, সফেদ কাপড়ে আলো এপাশ-ওপাশ হবে!” এখন! আপন ভুবনে তোর, অন্তত তেত্রিশটা নিখাদ বিবর্ণ ইতিহাস। এখনো কি ভালো মানুষ খুঁজিস? এখনো কি ঠক বাছিস? গাঁ উজাড় হয় না তোর? এক বসন্তে তোর আর ভালো মানুষ পাওয়া হবে না! খোঁজ, খুঁজতে থাক! অসৎ সঙ্গের সর্বনাশটা, অকারণ হতে দিলি না আমার। বুঝেছিস? “ভালোবাসার মতো ভালো মানুষ, সহজলভ্য…

ভালো লাগে, ভালো লাগে না

প্রিয়, কখনো কখনো বৃষ্টিস্নান ভালো লাগে। মনে হয় আকাশ থেকে ঝরনা ঝরে পড়ুক, মাথা পেতে নিই ঝরনার অবিরাম ধারা। কখনোই ভেসে যেতে ভালো লাগে না, ভেসে যেতে ভালো লাগে না। গড়ানো ধারা ধুয়ে দিলে ক্লান্তি আমার, ভালো লাগে। শীতলতা পৌঁছে গেলে, আবরণ ভেদ করে হৃদয়ের কাছাকাছি, ভালো লাগে। কেবল অসহ্য ঠান্ডায় জমে যেতে ভালো লাগে না। বয়ে চলা ধারার স্রোতে…

একদা রবীন্দ্রনাথ জেগে ছিলেন

মৃণালিনী, মা-হারা শিশুরা কেমন করে বাবার কোল খোঁজে, সেবার বিলেত যেতে যেতে দেখেছিলাম- লালবাড়ির ঘরে তুমি যখন শুয়ে থাকতে, হাতপাখার বাতাস, হোমিও ডাক্তারের ওষুধ, বাচ্চাদের মা ডাক, কিছুই তোমার ম্লান মুখে আভা এনে দেয়নি। বড় সাধ করে তোমার নাম রেখেছিলাম, মৃণালিনী। তোমার অপূর্ব রান্নার সমঝদার, সাদাসিধে জীবনের গল্পের হতভাগ্য পিয়াসী কবি, সেদিন থেকেই চলেছিলো একা দীর্ঘদিন, জানো? মাঝে মাঝে তোমার…

error: Content is protected !!