ফালতু তাগিদ

শোন, আর কখনো চলতি রেলের চেন ধরে তুই টানিস না। বুট চানাচুর বাদাম ভাজা ডাকিস না। স্বপ্নগুলো দে না উড়ে যেতে, কষ্ট হলেও এক্কেবারেই আমায় মনে রাখিস না। সত্যি হলো, উড়ন্ত বক তুই তো শুধু একলা ভালো-বাসিস না। হাত বাড়ালেই আমায় কেন চাস? তোর দু’চোখে, চৈত্র মাসের ঘোর সর্বনাশ। তোর জগতে আমায় নিয়ে ভাবনা সারি সারি, তোর দু’ধারে নদীর মাঝে…

বাঁচুন

আত্মজার জন্য বেঁচে থাকুন। স্বপ্নের জন্য বেঁচে থাকুন। জনকের কীর্তিতে মহীরুহ হতে অথবা হৃদয়বেত্তা জননীর জন্য অথবা যে সন্তান ভালোবাসে, তার জন্য বেঁচে থাকুন। অতি আদরের বোন, অথবা একাত্ম বন্ধুর জন্য বাঁচুন। পাশাপাশি হেঁটে চলা মানুষ অথবা মনুষ্য প্রজাতিতে আত্মার আপন কেউ নাই বা হলো, গাছ, মাছ, পশু, পাখি, কিন্নর অপ্সরাদের ভালোবেসেই না-হয় বাঁচুন। একটি কবিতার কিছু লাইন আপনার লেখার…

উলঙ্গ

তুই বলেছিলি, “নিপাট ভালো মানুষ ভালোবাসবি, সফেদ কাপড়ে আলো এপাশ-ওপাশ হবে!” এখন! আপন ভুবনে তোর, অন্তত তেত্রিশটা নিখাদ বিবর্ণ ইতিহাস। এখনো কি ভালো মানুষ খুঁজিস? এখনো কি ঠক বাছিস? গাঁ উজাড় হয় না তোর? এক বসন্তে তোর আর ভালো মানুষ পাওয়া হবে না! খোঁজ, খুঁজতে থাক! অসৎ সঙ্গের সর্বনাশটা, অকারণ হতে দিলি না আমার। বুঝেছিস? “ভালোবাসার মতো ভালো মানুষ, সহজলভ্য…

পরের বার বরাবর

সাদা শাড়িতে তোমাকেও বেশ মানাবে, একদিন ভোরে যখন হেঁটে বেড়ানো মানুষটা আমি, আর উঠবো না আলস্যে বিছানা ছেড়ে, তুমি যেন নাটক ভেবো না। ততোক্ষণে শক্ত শরীর আমার, ভাঁজ ভাঙে না। সাদা শাড়িতে, তোমাকেও বেশ মানাবে সেদিন। তুমি যদি মরো ? আচ্ছা যাও, পরের বার বরাবর… এখনো আমার মনে রূপসী অপ্সরা রমণীর স্বপ্ন আছে, অন্ধকারে কালো হরিণ, ধরবার তাড়া আছে। এবার…

ভালো লাগে, ভালো লাগে না

প্রিয়, কখনো কখনো বৃষ্টিস্নান ভালো লাগে। মনে হয় আকাশ থেকে ঝরনা ঝরে পড়ুক, মাথা পেতে নিই ঝরনার অবিরাম ধারা। কখনোই ভেসে যেতে ভালো লাগে না, ভেসে যেতে ভালো লাগে না। গড়ানো ধারা ধুয়ে দিলে ক্লান্তি আমার, ভালো লাগে। শীতলতা পৌঁছে গেলে, আবরণ ভেদ করে হৃদয়ের কাছাকাছি, ভালো লাগে। কেবল অসহ্য ঠান্ডায় জমে যেতে ভালো লাগে না। বয়ে চলা ধারার স্রোতে…

তোমার কান্নার শব্দে

কে চায় চাতক বিনে? কে ফেরে নীড়ে, দাম দিয়ে কষ্ট কিনে? হঠাৎ; চেনা মানুষগুলো, অনেক বেশি বন্য ছিলো! সন্দেহ হয়; এমন না-হয়, মানুষগুলোই অন্য ছিলো! কক্ষণো না, ছিঃ! জানতে কি চাও সব হারানোর মানে! বার কয়েকের দোষ নিয়ো না; স্বপ্নভরা- ভগ্নপ্রাণে! কেঁদো না শব্দ করে। তোমার কান্নার শব্দে কারো কারো ঘুম ভেঙে গেলে, তারা বিরক্ত হবেন । জানো না কি?…

একদা রবীন্দ্রনাথ জেগে ছিলেন

মৃণালিনী, মা-হারা শিশুরা কেমন করে বাবার কোল খোঁজে, সেবার বিলেত যেতে যেতে দেখেছিলাম- লালবাড়ির ঘরে তুমি যখন শুয়ে থাকতে, হাতপাখার বাতাস, হোমিও ডাক্তারের ওষুধ, বাচ্চাদের মা ডাক, কিছুই তোমার ম্লান মুখে আভা এনে দেয়নি। বড় সাধ করে তোমার নাম রেখেছিলাম, মৃণালিনী। তোমার অপূর্ব রান্নার সমঝদার, সাদাসিধে জীবনের গল্পের হতভাগ্য পিয়াসী কবি, সেদিন থেকেই চলেছিলো একা দীর্ঘদিন, জানো? মাঝে মাঝে তোমার…

ভালো থাকা সুখ

ভুলে গেলে তুই আবার শুরু ধ্যাত্তেরিদের গল্প, গালগল্পের সূচনালগ্নে মিথ্যে মিথ্যে কল্প। মন থেকে বল ভাল্লাগে না আমার কথকথা! মিথ্যে কেবল থাকিস ভুলে ভালোলাগা কতো কথা। এর নাম তুই জীবন বলিস, এর নাম নাকি বাঁচা! বাচালতা ঘটে তালা অঁাটা মুখে, অবিরাম অলসতা। চেপে চেপে রাখ চোখ বঁুজে থাক, আমায় ডাকিস না, বন্দি দুপরে চার দেয়ালে বন্দি থাকিস না। মুখ ফুটে…

আমাদের পৃথিবীর অ্যাটলাস

আমাদের ছাপোষা পিতা; কেরানি ছিলেন, অথচ তার বুকের ভেতর কী অতল জীবনের বাস! আমাদের পিতা, আমাদের পৃথিবীর অ্যাটলাস। বসতেন, অফিসের নিচুতলার চেয়ারগুলোর একটাতে। হোমরা—চোমরা বাবু সাহেবেরা কখনো তাকে তুইতোকারি করেছেন বলে শুনিনি! কিন্তু মন খারাপের কারণ যায়নি জানা, অনেকবার। পিতার সুনিপুণ শিল্পকর্ম দেখেছি। পিতার গতিময় হাতে ভালোবাসার টাইপ—রাইটারÑ চেয়ে থাকতাম বিমুগ্ধ নয়নে, রাজ্যের বিস্ময়ে। শব্দটা অর্কেস্ট্রার মতো, হৃদয়ে গেঁথে আছে…

সকলের-ই মা থাকুক

নতুন কোনো বনলতা, চাই না আমার। নতুন কোনো হেলেনের জন্য, কখনোই ব্যাগ্র নই । হাজার বছরের পথ হাঁটা সীমাহীন ক্লান্তি আমার, যতোই আসুক ধেয়ে, আমি পথচলি ক্লান্তিহীন। আমি যে স্নান করে এসেছি মায়ের স্নেহে, আমি যে সিক্ত বনলতা তোমার ভালোবাসায়। জীবনের পথ ফুরালো বলেই, এইবেলা লুটে নাও সুখ! পেট ফোলা জোঁক হয়ে, রক্ত লোলুপ! আফ্রোদিতি, কারো লালাভ রক্ত রতন, উপহারে…

এখানে তন্ময় সাহা এর 456 টি কবিতা পাবেন

error: Content is protected !!